Friday, 12 August 2016

পাবলিক রিলিজ হল উইন্ডোজ ১০ রেডস্টোন আপডেট। দেখে নিন নতুন কি কি থাকছে এবং কিভাবে ডাউনলোড আর এক্টিভেট করবেন।

গত ২ আগস্ট, ২০১৬ তারিখে মাইক্রোসফট বহু প্রতীক্ষিত উইন্ডোজ ১০ এর রেডস্টোন আপডেট পাবলিক রিলিজ দেয়।যেহেতু এটা উইন্ডোজ ১০ এর ১ বছর বয়স হওয়া উপলক্ষে রিলিজ দেয়া হয় তাই এটাকে এনিভারসারি আপডেটও বলা হয়েছে।

ছবি - Shutter Stock

এই আপডেটটি মূলত রিলিজ দেয়া হয় উইন্ডোজ ১০ এ নতুন কিছু ফিচার এড করার জন্য।এছাড়াও উইন্ডোজ ১০ এর আগের বিল্ড এর অনেক বাগসও ফিক্স করা হয়েছে এই আপডেটে।আগে দেখা যাক নতুন কি কি থাকছে এই আপডেটে। :)


নতুন স্টার্ট স্ক্রিন

এই আপডেটে উইন্ডোজ ১০ এর আগের স্টার্ট স্ক্রিন বা স্টার্ট মেনুতে কিছুটা চেঞ্জ আনা হয়েছে।উইন্ডোজ ১০ এর ইউনিভারসাল অ্যাপগুলাতে যেমন ইন্টারফেস থাকে সেই একই ধরনের ইন্টারফেস স্টার্ট মেনুতেও দেয়া হয়েছে।ইউজার অ্যাকাউন্ট এর পিকচার আর সাইন ইন/আউট এর অপশন এখন স্টার্ট স্ক্রিন এর নিচের দিকে দেয়া হয়েছে। আর স্টার্ট মেনু এখন আগের থেকেও অনেক বেশি স্মার্ট এবং আরও বেশি সাজানো গোছানো।


নতুন সেটিংস ইন্টারফেস এবং ডার্ক থিম

উইন্ডোজ ১০ এর আগের সেটিংস মেনুটা এই আপডেটে চেঞ্জ করা হয়েছে। আগের সেটিংস মেনুতে প্রত্যেকটা আলাদা আলাদা সেটিংস অপশন এর জন্য আলাদা আলাদা আইকন ছিল না।এই আপডেটে প্রত্যেকটি আলাদা আলাদা সেটিংস অপশন এর জন্য আলাদা আলাদা আইকন দেয়া হয়েছে।এছাড়া আগের সেটিংস মেনুতে অনেক সেটিংস অপশনই ছিল না যেগুলা কন্ট্রোল প্যানেল থেকে খুজে নিতে হত।এই সেটিংস অপশনগুলা এই আপডেতে ডিফল্ট সেটিংস মেনুতে দেয়া হয়েছে। এছাড়া এই আপডেটে সেটিংস মেনু থেকে পিসির ডিফল্ট থিম (লাইট/ডার্ক) চেঞ্জ করার অপশনও দেয়া হয়েছে।


নতুন উইন্ডোজ স্টোর ইন্টারফেস

এই আপডেটে আগের উইন্ডোজ স্টোরের ইন্টারফেসটার অনেক চেঞ্জ করা হয়েছে। উইন্ডোজ স্টোর এখন আগের থেকে অনেক বেশি এট্রাকটিভ এবং স্মার্ট।



মাইক্রোসফট এজ ইম্প্রুভমেন্ট

এটা উইন্ডোজ ১০ এর জন্য মাইক্রোসফট এর ডেভেলপ করা অসাধারন একটা ওয়েব ব্রাউজার।যারা উইন্ডোজ ১০ ইউজ করেন তারা এটার সাথে খুব ভালভাবেই পরিচিত।এই আপডেটে এই ব্রাউজারটি আরো বেশি ইম্প্রুভ করা হয়েছে।সবথেকে বড় ফিচারটা হল Extensions ইউজ করার সুবিধা।আমরা গুগল ক্রোম বা ফায়ারফক্স বা অপেরা যে ব্রাউজারই পিসিতে ইউজ করিনা কেন সবসময় যেটার প্রতি গুরুত্ব দেই তা হল এক্সটেনশনস।
এটা আশা করি সবাই চেনেন।ব্রাউজার এর কার্যক্ষমতা বহুগুনে বাড়িয়ে দেয় এই ব্রাউজার এক্সটেনশনস।আগে মাইক্রোসফট এজ ব্রাউজারে এক্সটেনশন ইউজ করা সম্ভব না হলেও এই আপডেটে এটা করা সম্ভব হবে।এছাড়াও কয়েকটা সাইটে বা কয়েকটা সাইটে আপনার অ্যাকাউন্টে লগিন করতে আপনি বায়োমেট্রিক সিকিউরিটি ইউজ করতে পারবেন এজ ব্রাউজার এর মাধ্যমে (যদি আপনার পিসি বা ল্যাপটপ এটা সাপোর্ট করে)।


ওয়াইফাই হটস্পট (ইন্টারনেট শেয়ারিং)

উইন্ডোজ ৭ বা ৮ বা উইন্ডোজ ১০ এর আগের ভারশনেও পিসি বা ল্যাপটপ থেকে কোন মোবাইলে ওয়াইফাই এর সাহায্যে ইন্টারনেট শেয়ার করতে হলে থার্ড পার্টি সফটওয়্যারের সাহায্য নিতে হত। যেমন  My wifi router, Virtual router manager বা Connectify এইসব সফটওয়্যার। কিন্তু উইন্ডোজ ১০ এর এই ভারশনে ডিফল্টভাবে ইন্টারনেট শেয়ারিং এর এই অপশনটা দেয়া হয়েছে সেটিংস অপশনে।তাই এইসব থার্ড পার্টি সফটওয়্যারগুলার আর দরকার পড়বে না।


😀

একশন সেন্টার

এবার একশন সেন্টারেও থাকছে নতুন ইউজার ইন্টারফেস।একশন সেন্টার বলতে আমরা যেটাকে উইন্ডোজ ১০ এর নোটিফিকেশন সেন্টার বলে চিনি,যেখানে পিসির বিভিন্ন অ্যাপ আর নরমাল নোটিফিকেশন আসে।
এবার একশন সেন্টার এর উপরের অংশে স্টিকি নোট ঝুলিয়ে রাখা যাবে এবং যেকোনো মেসেজ বা চ্যাট প্রত্যেকটি থাম্বনেইল সহ একশন সেন্টারে থাকবে।এবার একশন সেন্টার হবে ক্লাউড বেসড। অর্থাৎ আপনার আইফোন বা এন্ড্রয়েড বা উইন্ডোজফোন এর নোটিফিকেশনগুলাও আপনি উইন্ডোজ ১০ এর একশন সেন্টারে sync করতে পারবেন চাইলে।


কর্টানা ইম্প্রুভমেনট

কর্টানা ছিল উইন্ডোজ ১০ এর বেস্ট ফিচারসগুলার মধ্যে একটা।সব উইন্ডোজ ১০ ইউজাররাই জানেন যে করটানা কি, বাট যারা জানেন না তাদের জন্য, করটানা হচ্ছে উইন্ডোজ ১০ ইউজার এর পারসোনাল অ্যাসিস্ট্যান্ট।করটানা দিয়ে কি কি করতে পারবেন বা কিভাবে কাজে লাগাতে পারবেন সেটা একটু গুগল ঘাটলেই বুঝবেন।
সব যদি আমিই বলে দেই তাহলে আপনি কি শিখলেন জীবনে? 😛  যাই হোক, এবার করটানা লকস্ক্রিনেও এভেইলেবল হবে,অর্থাৎ আপনি সাইনড ইন না থাকলেও করটানা কাজ করবে।

নতুন স্কাইপ অ্যাপ

আগে উইন্ডোজ ১০ এর জন্য কোন অফিশিয়াল ফুল ফিচারড স্কাইপ ইউনিভারসাল অ্যাপ ছিল না।স্কাইপ ইউজ করতে চাইলে ডেক্সটপ অ্যাপ ইউজ করতে হত।কিন্তু উইন্ডোজ ৮ এর মত স্টোরে কোন অফিশিয়াল ইউনিভারসাল অ্যাপ ছিল না।কিন্তু এবার সব ইউজাররাই বিল্ট ইন স্কাইপ অ্যাপ পাবেন।যদিও এটা বেটা বা প্রিভিউ ভারশনে আছে এখনো।



এছাড়া আরো অনেক নতুন ফিচার আছে এই আপডেটে যা লিখে শেষ করা যাবে না।আপনি নিজে ইউজ করলেই বুঝবেন আর কি কি নতুন ফিচারস আছে বা আর কোন কোন বাগস ফিক্স করা হয়েছে।

কিভাবে ডাউনলোড করবেন

আপনি যদি উইন্ডোজ ১০ ইউজার হয়ে থাকেন আর যদি চান যে আপনার আগের কোন ডাটা বা সেটিংস বা অ্যাপস ডিলিট না হোক তাহলে আপনি সরাসরি উইন্ডোজ আপডেট অপশন থেকে উইন্ডোজ আপডেট দিয়ে দিতে পারেন।আর যদি ক্লিন ইন্সটল করতে চান তাহলে ISO ফাইল ডাউনলোড করে পেনড্রাইভ দিয়ে বুটেবল করে পিসি অথবা ল্যাপটপে ইন্সটল করতে পারেন। ISO ফাইল এখান থেকে  ডাউনলোড করতে পারেন।

কিভাবে এক্টিভেট করবেন

আপনি যদি উইন্ডোজ ১০ রিলিজ হওয়ার প্রথম দিকে উইন্ডোজ ইন্সটল করে থাকেন এবং উইন্ডোজ ১০ এর অটোমেটিক একটিভেটেড ভারশন ইউজ করে থাকেন তাহলে চিন্তার কোন কারন নাই, এই ভারশনটিও আপনার পিসি বা ল্যাপটপে ইন্সটল করার পরে অটোমেটিক এক্টিভেট হবে। আর যদি আপনি আজ পর্যন্ত কোনদিন উইন্ডোজ ১০ ১ বারের জন্যও ইন্সটল না করে থাকেন তাহলে আপনার দুর্ভাগ্য।
আপনাকে গুনতে হবে ঠিক ১২০ ডলার :-P। কারন উইন্ডোজ ১০ এর ফ্রি আপগ্রেড অফার গত মাসেই শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু আপনি যদি লিগালি উইন্ডোজ ১০ একটিভেট করতে না চান তাহলে একটিভেটর ইউজ করতে পারেন।জাস্ট উইন্ডোজ ইন্সটল করার পরে এই activator তা ইন্সটল করে আবার আনইন্সটল করবেন এন্ড Done। ১২০ ডলারের কাজ শেষ। 😀  কিন্তু activator টা আপনাকে একটু কষ্ট করে এই লিঙ্কে যেয়ে টরেন্ট   থেকে ডাউনলোড করে নিতে হবে।

ধন্যবাদ আমার টিউনটা ধৈর্য সহকারে পড়ার জন্য।যেকোনো ধরনের প্রশ্ন থাকলে টিউনমেন্টে জানাতে পারেন।

0 comments:

Post a Comment