Tuesday, 11 October 2016

DSLR ক্যামেরার কিছু মৌলিক বাবহারবিধি, ফটোগ্রাফির জন্য যেগুলো অবশ্যই জানতে হবে

DSLR ক্যামেরার কিছু মৌলিক বাবহারবিধি নিয়ে আলোচনা করব আজ। ক্যামেরার লেন্স পরিচিতি, প্রকারভেদ অনুসারে বাবহারবিধি আলোচনা করেছিলাম প্রথম পর্বে।

যারা মিস করেছেন তারা এইখান থেকে দেখে নিতে পারেন

DSLR ক্যামেরায় কিছু মৌলিক সেটিং রয়েছে, ক্যামেরা চালানোর আগে অবশ্যই এগুলো সম্পর্কে ভাল ধারণা থাকা জরুরি।

এগুলো না জানলেও আপনি DSLR এর A+ মোডে সকল পরিবেশ দারুণ সকল ছবি তুলতে পারবেন, যাকে বলে সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় মোড।

আপনাকে কোন কিছু পরিবর্তন করতে হবে না, আপনার বুদ্ধিমান  DSLR আপনা আপনি অবস্থা বুঝে তার নিজের সেটিং নিজেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে ঠিক করে নিবে।

যারা ক্যামেরা ভাল করে চালাতে জানেন না বা যারা নিজেদেরকে ক্যামেরার থেকে কম বুদ্ধিসম্পন্ন মনে করেন তাদের সব থেকে প্রিয় সেটিং এটি।

কিন্তু একটি যন্ত্র কি করে আপনার মনের ইচ্ছা বুঝবে বলুন। আপনাকে নির্দেশ দেবার ক্ষমতা অর্জন করতে হবে, তাহলে ক্যামেরা আপনার নির্দেশ পালন করবে।

মনে রাখবেন ক্যামেরা টাকা খরচ করে আপনি কিনেছেন, ক্যামেরা আপনাকে কেনে নাই।

সুতরাং ক্যামেরাকে নিজের ইচ্ছামত ব্যবহার করা শিখতে হলে

আপনাকে অবশ্যই  যে বিষয়গুলো সম্পর্কে সম্যক ধারণা থাকতে হবে তা হলঃ
  • Aperture বা F ভ্যালুঃ
ক্যামেরার সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ ৩ টি বিষয়ের মধ্যে প্রথমটি হল Aperture বা F ভ্যালু। যেমন F1.2, F1.4, F1.8, F2.0, F2.8, F3.5, F6.0। সব লেন্স দিয়ে কিন্তু  F ভ্যালু ইচ্ছামত কমানো যায় না। লেন্সের প্রকারভেদের উপরে  F ভ্যালু নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা নিরভ্র করে।  F এর ভ্যালু যত কমবে লেন্সের দাম তত বাড়বে। বলা যায় F এর সাথে দামের সম্পর্ক অনেকটা দা-কুমড়ার সম্পর্ক রয়েছে। যে লেন্স দিয়ে সবথেকে কম F ভ্যালু ব্যবহার করা যায় সেই লেন্সের “বোকে” ক্ষমতা তত বেশি। “বোকে” জাপানী শব্দ, যার ইংরেজি হল “Blur”, যার বাংলা দারায় ছবির বিষয়বস্তু ঠিক রেখে ব্যাকগ্রাউন্ডকে ঝাপসা করে দেওয়ার ক্ষমতা। F এর ভ্যালু যত কমবে ব্যাকগ্রাউন্ড এর ঝাপসা তত বাড়বে।

aperture

লেন্সের মধ্যে Aperture ব্লেড থাকে, দামি লেন্সে এই ব্লেডের সংখ্যা বেশি থাকে। ব্লেড বেশি থাকার অর্থ ব্যাকগ্রাউন্ড অনেক বেশি নমনীয় ভাবে বোকে হবে, যা আমাদের চোখে দেখতে মনোরম লাগে। এই Aperture ব্লেডগুলির কাজ হল Aperture ভ্যালু যত কমানো যাবে, লেন্সের মুখ তত বেশি খুলে দিবে। অন্যদিকে Aperture ভ্যালু যত বাড়ানো হবে, লেন্সের মুখ তত বেশি ছোট হয়ে আসবে।  অনেকটা নিচের ছবির মত।

aperture-diagram

লেন্সের মুখ বেশি খুলে দিলে বোকে বেশি হবে, আর কম খুলে দিলে বোকে কম হবে। কিন্তু জানালা যেমন বেশি খুলে দিলে ঘরে বেশি আলো ঢুকতে পারে ঠিক একইভাবে লেন্সের মুখ বেশি খুলে দিলে বা Aperture ভ্যালু কমিয়ে দিলে ছবিতে বেশি আলো প্রবেশ করবে। কম আলোযুক্ত স্থানের জন্য এই পদ্ধতি খুবি ব্যবহারযোগ্য।
ক্যামেরাতে কিছু মোড আগে থেকেই সেট করা থাকে, যার সাহায্যে ক্যামেরার অন্যান্য সেটিং অপরিবর্তিত রেখে শুধুমাত্র Aperture ভ্যালু কমিয়ে বাড়িয়ে দারুণ সব ছবি তোলা যায়।  ব্রান্ড ভেদে এই সেটিং বা মোডের নামও ভিন্ন হয়ে থাকে। ক্যানন ক্যামেরাতে এটিকে AV বা  Aperture Value বলা হয়ে থাকে। এই AV মোড এ দিয়ে অন্য সকল সেটিং ঠিক রেখে মারাত্মক কিছু বোকে টাইপের ছবি তোলা যায়। অনেকে DSLR কেনে শুধুমাত্র এই ধরণের বোকে ছবি তোলার জন্য।

600d-design
  • শাটার স্পীডঃ
এটি ক্যামেরার সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ ৩ টি বিষয়ের মধ্যে দ্বিতীয়টি। অনেকেই হইত জানেন যে DSLR দিয়ে শাটার স্পীড নিয়ন্ত্রণ করে ছবি তোলা যায়। কিন্তু বিস্তারিত বাবহারবিধি জানেন না। তাই শাটার স্পীডের মজাও তারা বুঝতে পারে না। অবস্থা বুঝে শাটার স্পীড নিয়ন্ত্রণ করে নির্দিষ্ট পরিমাণ আলো দিয়ে ছবি তুলতে এই সেটিং এর জুরি নেই। একটি ছবি তোলার জন্য সাটার স্পীড ২, ৩ মিনিট ও হতে পারে। আবার একটি ছবির জন্য ১ সেকেন্ডের কয়েক হাজার ভাগের এক ভাগ ও হতে পারে। সকল ক্যামেরার জন্য আগে থেকেই সম্পূর্ণ শাটার স্পীডের নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ছবি তোলার জন্য একটা অপশন রাখা হয়। ক্যানন ক্যামেরার জন্য আকে বলা হয় TV।

shutter

এই সেটিং এ দিলে আপনি শুধুমাত্র শাটার স্পীড নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন, বাকিটা অবস্থা বুঝে ক্যামেরা বাবস্থা নিবে। অনেক আলোকচিত্র গ্রাহক ই জটিল মুহূর্তে এই সেটিং ব্যবহার করে থাকেন। এটি সহজ এবং সেমি অটোমেটিক হওয়াতে অনেকটা পরিচালনায় স্বাচ্ছন্দ্য পাওয়া যায়। শাটার স্পীডের কম বেশির কারণে ছবির মান ও ভাল খারাপ হতে পারে। যদি কারো ক্যামেরা বা লেন্স কোনটাতেই  Image Stabilizer / Vibration Reduction না থাকে তাহলে তাকে অবশ্যই ভাল ছবির জন্য নুন্নতম একটি শাটার স্পীড অনুসরণ করতে হবে, যেমন হাতে ক্যামেরা ধরে  ছবি তোলার জন্য আমার পরামর্শ সর্বনিন্ম শাটার স্পীড ১ / ৬০। এর থেকে কম শাটার স্পীডে ছবি তুলতে হলে আপনাকে Tripod ব্যবহার করতে হবে, নয়ত আপনি আশানুরূপ ছবি পাবেন না।

shutter-speed-effect-chart-790x700
  • ISO:

ISO এর উপর ভহাল নয়ন্ত্রন না থাকলে ভাল ছবি পাওয়া সম্ভব নয়। কারণ AV/TV যে মোডেই আপনি ছবি তুলুন না ক্যান, ক্যামেরাতে ISO অবশ্যই আপনাকে সেট করে নিতে হবে, ISO অনুসারে আপনার নির্দেশ পালনে ক্যামেরা তখন অন্যান্য সেটিং আপনাআপনি ঠিক করে নিবে। ISO দ্বারা ছবিতে আলোর পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করাকে বোঝায়। ছবিতে কোন পরিবেশে কেমন আলো দিলে ভাল হবে তা ISO ভ্যালু ঠিক করার মাধ্যমে আপনাকে আগে থেকেই ঠিক করে দিতে হবে। ক্যামেরাভেদে ISO ভ্যালু সরবনিন্ম ৫০ থেকে শুরু করে ১০২৪০০ কিংবা তার থেকেও কমবেশি আছে.

isodigital

ISO ভ্যালু যত কম থাকবে ছবি তত পরিষ্কার আসবে, ISO ভ্যালু যত বেশি হবে ছবি তত অপরিষ্কার আসবে। ঠিক একিভাবে ISO ভ্যালু যত কম থাকবে ছবিতে আলো তত কম আসবে, ISO ভ্যালু যত বেশি হবে ছবিতে তত আলো আসবে। সুতরাং বোঝা গেল কম আলযুক্ত স্থানে ISO ভ্যালু বাড়িয়ে দিয়ে আপনি ছবি তুলতে পারবেন কিন্তু সেক্ষেত্রে ছবি অপরিষ্কার আসবে।

iso-effects

বিষয়গুলা প্রথমদিকে অনেক জটিল মনে হলেও কিছুদিন বাবহাররের পরে সব নিজে থেকে আপনাআপনি চলে আসবে। এতক্ষণ যা কিছু বললাম তা এখন এক কথায় প্রকাশ করব একটি ছবির মাধ্যমে। আর একটি কথা, ক্যামেরা দিয়ে যত ছবি তুলবেন, যত গবেষণা করবেন, আপনি তত ভাল ছবি তুলতে পারবেন।

photography-shutter-speed-aperture-iso

### আরও জানতে ভিসিট  করুণ আমার ফটোগ্রাফি ওয়েবসাইট

1 comment:

  1. ক্যামেরার লেন্স পরিচিতি, প্রকারভেদ অনুসারে বাবহারবিধি আলোচনা করেছিলাম প্রথম পর্বে।

    প্রথম পর্বের লিংকটাতে প্রবেশ করা যাচ্ছে না। দয়া করে পুনরায় লিংক টা আমাদে দিলে ভালো হয়। আমি বিষয় টি পড়তে চাই।

    ReplyDelete