Showing posts with label ফ্রিল্যান্সিং করার আগে যা জানা প্রয়োজন. Show all posts
Showing posts with label ফ্রিল্যান্সিং করার আগে যা জানা প্রয়োজন. Show all posts

Thursday, 7 April 2022

ফ্রিল্যান্সিং করার আগে যা জানা প্রয়োজন

 

ফ্রিল্যান্সিং হলো বর্তমান সময়ের সবচেয়ে স্মার্ট বিজনেস। ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশের লক্ষ লক্ষ পরিবার আজ উন্নতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। বন্ধুদের মধ্যে অনেকেই ফ্রিল্যান্সিং করতে চান। কিন্তু আপনি কি জানেন ফ্রিল্যান্সিং করার আগে আপনাকে কি কি বিষয় জানতে হবে?

এই আর্টিকেলটি তাদের জন্যই তৈরি করা হয়েছে। যারা ফ্রিল্যান্সিং করে নিজের ক্যারিয়ার গড়তে চান। আমি আমার অভিজ্ঞতা থেকে ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার গাইডলাইন শেয়ার করতে যাচ্ছি। নতুনদের জন্য আর্টিকেলটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

শুরুতেই জেনে নিই ফ্রিল্যান্সিং কাকে বলে।

ফ্রিল্যান্সিং কি?

ফ্রিল্যান্সিং মানেই হলো মুক্ত পেশা। আপনি যদি ঘরে বসেই ইনকাম করতে চান তবে ফ্রিল্যান্সিং হতে পারে আপনার জন্য চমৎকার একটি অনলাইন চাকরি।

ফ্রিল্যান্সিং যে কোন শ্রেণী-পেশার মানুষ করতে পারে। বর্তমান সমাজের উদিয়মান যুবক যুবতীদের মাঝে ফ্রিল্যান্সিং করার আগ্রহ খুব বেশি পরিমাণে দেখা যাচ্ছে। এটা সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখে।

আপনার যদি স্কিল থাকে, তবে ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসগুলোতে কাজের অভাব হবে না। আর কাজ করতে পারলে অর্থেরও অভাব হবে না। তবে এখানে ধৈয্যের সাথে নিজের দক্ষতার পরিচয় দিতে হবে।

সবচেয়ে বড় বিষয় হলো ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজগুলো যতই সহজ হোক না কেন, প্রথমত নিজেকে সবার থেকে আলাদা করতে একটু বেশি পরিশ্রম দিতে হবে। আপনাকে এমন কাজ শিখতে হবে যে কাজ কম্পিউটারে করা যায়।

ফ্রিল্যান্সিং করার আগে যা জানা প্রয়োজন

ফ্রিল্যান্সিং করার আগে আপনাকে অনেক কিছুই জানতে হবে। নাহয় ফ্রিল্যান্সিং করতে গিয়ে আপনি যে কোন সময় এই সেক্টর থেকে ঝরে যেতে পারেন।

ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য কি কি প্রয়োজন হয়, কোন কাজের চাহিদা ফ্রিল্যান্সিংয়ে সবচেয়ে বেশী, ফ্রিল্যান্সিং মার্কেপ্লেস নির্বাচন সহ আরো বিভিন্ন বিষয় জানা নতুনদের জন্য অত্যন্ত জরুরি।

(১) ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য সবচেয়ে রিকমেন্ডেড বিষয় হলো স্কিল। কম্পিউটারে করা যায় এমন যে কোন কাজের উপর আপনি ফ্রিল্যান্সিং করতে পারবেন। একটি ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে হাজার হাজার ক্যাটাগরির কাজ পাওয়া যায়।

তবে আপনি চেষ্টা করবেন, কোন মেজর ক্যাটাগরির কাজ শেখার জন্য। মেজর ক্যাটাগরি বলতে গ্রাফিক্স ডিজাইন, ওয়েব ডিজাইন, কম্পিউটার প্রোগ্রামিং, ডিজিটাল মার্কেটিং ইত্যাদি।

এই ক্যাটাগরি গুলোর মধ্যে অনেক সাব ক্যাটাগরি রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ গ্রাফিক্স ডিজাইন এর সাব ক্যাটাগরি যেমন: ফটো এডিটিং, ইনফো গ্রাফিক, মোশন গ্রাফিক ইত্যাদি।

আপনি যদি কোন সাব ক্যাটাগরি নিয়ে কাজ করেন, তবে কাজের পরিমাণটা সীমিত হয়ে আসবে। আবার যদি কোন মেজর ক্যাটাগরিতে কাজ করতে পারেন, তবে আপনি কাঙ্খিত ক্যাটাগরিতে বিভিন্ন কাজ করতে পারবেন।

(২) কাজ শেখার পর সঠিক ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস নির্বাচন করা অত্যন্ত জরুরি। নতুনরা ফ্রিল্যান্সিং করতে গিয়ে একটি বড় ভুল করে, তা হলো সঠিক মার্কেটপ্লেস নির্বাচন করতে পারে না।

অচেনা এবং অজানা মার্কেটপ্লেসে একাউন্ট তৈরি করে কাজ শুরু করে দেয়। এটা নিত্যান্তই একটি ভুল। আপনি যেই মার্কেটপ্লেসে কাজ করতে চাচ্ছেন সেই মার্কেটপ্লেস সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা রাখা উচিত।

বিশেষ করে কাঙ্খিত সেই মার্কেটপ্লেসটি ট্রাস্টেড কিনা, তাদের পেমেন্ট সিস্টেম কি, কত বছর ধরে তারা সার্ভিস দিচ্ছে এই সমস্ত বিষয় আপনাকে জানতেই হবে।

নতুনরা অনেক সময় ভুল মার্কেটপ্লেস নির্বাচন করে। ফলে এমনও হয় যে, কাজ পায় না, আবার কাজ পেলেও কাজ শেষে পেমেন্ট পায় না। এই ধরনের আরো বিভিন্ন সমস্যা তৈরি হয়। এজন্য ফ্রিল্যান্সিং করার আগে আপনাকে মার্কেটপ্লেস সম্পর্কে পূর্ব ধারণা নেওয়া আবশ্যক।

(৩) খুব বেশী ক্যাটাগরির কাজ একসাথে করাটাও উচিত না। আপনি যদি গ্রাফিক্স ডিজাইন এবং গ্রোগ্রামিং একসাথে করতে যান তবে দেখবেন যে সার্ভিস দিতে গিয়ে এলোমেলো মনোভাব চলে আসবে।

তবে হ্যাঁ, আপনার যদি একাধিক বিষয়ের স্কিল থাকে, তবে দুটি মার্কেটপ্লেস একসাথে টার্গেট করতে পারেন। মনে করুন, Fiverr মার্কেটপ্লেসে গ্রাফিক্স ডিজাইনের উপর একাউন্ট খুললেন আর Upwork মার্কেটপ্লেসে প্রোগ্রামিং সার্ভিসের উপর একাউন্ট খুললেন।

ইচ্ছে করলে এভাবে কাজ করতে পারেন। তবে একসাথে একাধিক স্কিলে কাজ করা উচিত মনে করি না। এটা আমার পার্সোনাল এক্সপেরিয়েন্স।

তবে আপনি যদি নিজস্ব ওয়েবসাইট এর মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিং করতে চান, তবে আপনার ওয়েবসাইটে একসাথে বিভিন্ন সার্ভিসের অফার করতে পারবেন। এতে কোন প্রকার সমস্যা হবে না।

ফিল্যান্সিং করার যা যা প্রয়োজন হবে

(১) ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য প্রথম রিকমেন্ডেড বিষয় হলো আপনার স্কিল। আপনাকে এমন একটি বিষয়ের স্কিল ডেভেলপ করতে হবে যেটার মাধ্যমে অনলাইন থেকে ইনকাম করতে পারবেন।

হতে পারে সেটা গ্রাফিক্স ডিজাইন, ওয়েব ডিজাইন, কম্পিউটার প্রোগ্রামিং, এসইও বা ডিজিটাল মার্কেটিং ইত্যাদি।

(২) ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য আপনার একটি কম্পিউটার অথবা ল্যাপটপ এর প্রয়োজন হবে। অনেকেই প্রশ্ন করেন মোবাইলে কি ফ্রিল্যান্সিং করা যায়? এই প্রশ্নের সাধারণ উত্তর করা যায়। তবে আপনি যদি প্রফেশনালি ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে ক্যারিয়ার গড়তে চান, তবে ফ্রিল্যান্সিংকে মোবাইলে টার্গেট করা উচিত হবে না।

আপনার যদি একটি কম্পিউটার বা ল্যাপটপ থাকে তবে অনেক সহজ ভাবেই ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ করতে পারবেন।

(৩) ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য আপনার কাঙ্খিত ডিভাইসে ইন্টারনেট সংযোগ এর প্রয়োজন হবে। ফ্রিল্যান্সিং যেহেতু ইন্টারনেটে ভিত্তিক কাজ। তাই ইন্টারনেট সংযোগ অবশ্যই লাগবে।

এই তিনটি বিষয় যদি আপনার থাকে তবে অবশ্যই ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য আপনি রেডি। চাইলে ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার আজ থেকেই শুরু করতে পারবেন।

নুতন অবস্থায় যদিও ফ্রিল্যান্সিং বিষয়টা অনেক কঠিন মনে হয়। তবে আপনি যদি সফল কয়েকজন ফ্রিল্যান্সারকে ফলো করেন, তবে সহজেই ফ্রিল্যান্সিংয়ে এগিয়ে যেতে পারবেন।

শেষ কথাঃ

বাংলাদেশ একটি ছোট্ট দেশ। এদেশের বেশিরভার মানুষ কৃষিকাজ করে। জনসংখ্যা অনুযায়ী এদেশের মানুষের কর্মসংস্থানের খুব অভাব। তাই ফ্রিল্যান্সিং হতে পারে শিক্ষিত মানুষের বেকারত্ব রোধের চমৎকার একটি পথ।

প্রিয় পাঠক, আমি আমার অভিজ্ঞতা থেকে যেই বিষয় গুলো উপস্থাপন করেছি, আপনি যদি ফ্রিল্যান্সিং করার আগে এই বিষয়গুলো ভালো ভাবে ফলো করেন, তবে আশা করা যায় আপনি খুব সহজেই ফ্রিল্যান্সিংয়ে সফলতা পাবেন ইনশাআল্লাহ।

আপনার যদি ফ্রিল্যান্সিং বিষয়ে কোন প্রশ্ন থাকে তবে অবশ্যই টিউমেন্ট করবেন। আর হ্যাঁ, আর্টিকেলটি যদি আপনার কাছে ভালো লাগে তবে টিউমেন্ট করতে ভুলবেন না। সবাইকেই ধন্যবাদ।